ইলেকট্রিক্যাল শর্ট নোট/টীকা সকল EEE সবার জন্য খুবই প্রয়োজনীয়। PGCB, DPDC, DESCO, REB সহ সকল সরকারী/বেসরকারী জবের লিখিত পরীক্ষার জন্য। বিশেষ করে SAE (Electrical) জব প্রিপারেশন। তবে শুধু জব প্রিপারেশন এর জন্য পড়বেন না, আপনি একজন ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার হিসাবে পড়বেন, জেনে রাখবেন। কারন এইসব কমন কিছু বিষয় আপনাকে যেকোন যায়গায় প্রশ্ন করতে পারে, আপনার অফিসের বস এসব প্রশ্ন করতে পারে। আর তখন কিছু উত্তর দিতে না পারলে, আপনারই খারাপ লাগবে। তাই শুধু জবের প্রস্তুতি হিসাবে নয়, একজন ইঞ্জিনিয়ার হিসাবে জেনে রাখুন এই নোটগুলো। অনেকেই আমার উপর রাগ করতে পারেন, ভাবতে পারেন এগুলোত জানি। কিন্তু আমার অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, অনেকদিন এসব না পড়ে থাকলে কারোর মনে থাকেনা (বিশেষ করে আমার মনে থাকেনা)। তাই সকল ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারদের জন্য আমার এই সামান্য চেষ্টা মাত্র- মাহিন, ই টিপস বিডি।
১। কারেন্ট কাকে বলে?
পরিবাহী পদার্থের মধ্যকার মুক্ত ইলেকট্রন সমূহ একটি নিদ্রিষ্ট দিকে
প্রবাহিত হওয়ার হারকেই কারেন্ট বলে। ইহাকে I বা i দ্বারা প্রকাশ করা হয়, এর
একক অ্যাম্পিয়ার (A বা Amp.) অথবা কুলম্ব/সেকেন্ড ।
২। ভোল্টেজ কাকে বলে?
পরিবাহী পদার্থের পরমাণুগুলির মুক্ত ইলেকট্রন সমূহকে স্থানচ্যুত করতে যে বল
বা চাপের প্রয়োজন সেই বল বা চাপকেই বিদ্যুৎ চালক বল বা ভোল্টেজ বলে। একে V
দ্বারা প্রকাশ করা হয় এর একক Volts.
৩। রেজিষ্ট্যান্স কাকে বলে?
পরিবাহী পদার্থের মধ্য দিয়ে কারেন্ট প্রবাহিত হওয়ার সময় পরিবাহী পদার্থের
যে বৈশিষ্ট্য বা ধর্মের কারণে উহা বাধাগ্রস্ত হয় উক্ত বৈশিষ্ট্য বা ধর্মকেই
রোধ বা রেজিষ্ট্যান্স বলে। এর প্রতীক R অথবা r, আর একক ওহম (Ω)।
৪। ট্রান্সফরমার
ট্রান্সফরমার একটি ইলেক্ট্রিক্যাল মেশিন যা পরিবর্তনশীল বিদ্যুৎকে
(Alternating current) এক ভোল্টেজ থেকে অন্য ভোল্টেজে রূপান্তরিত করে।
ট্রান্সফরমার স্টেপ আপ অথবা স্টেপ ডাউন দুই ধরনের হয়ে থাকে এবং এটি
ম্যাগনেটিক ইন্ডাকশন (Magnetic induction) নীতি অনুসারে কাজ করে।
ট্রান্সফরমারে কোন চলমান/ঘূর্ণায়মান অংশ থাকে না, এটি সম্পূর্ণ স্থির
ডিভাইস। ট্রান্সফরমারে দুটি উইন্ডিং থাকে, প্রাইমারি এবং সেকেন্ডারি
উইন্ডিং । প্রাইমারি ওয়াইন্ডিয়ে ভোল্টেজ প্রদান করলে ম্যাগনেটিক ফিল্ড তৈরি
হয় এবং ম্যাগনেটিক ফ্লাক্স আয়রন কোরের মধ্য দিয়ে সেকেন্ডারি ওয়াইন্ডিয়ে
যায় এবং সেখানে ম্যাগনেটিক ফিল্ড তৈরি হয়। যার ফলশ্রুতিতে সেকেন্ডারি কয়েলে
ভোল্টেজ পাওয়া যায়। ট্রান্সফরমারের ভোল্টেজ পরিবর্তনের হার প্রাইমারি এবং
সেকেন্ডারি কয়েলের প্যাঁচ সংখ্যার হারের উপর নির্ভর করে। তবে মনে রাখবেন,
ট্রান্সফরমার শুধু ভোল্টেজের পরিবর্তন ঘটায় কিন্তু পাওয়ার ও ফ্রিকুয়েন্সি
অপরিবর্তিত থাকে। পাওয়ার ঠিক থাকে তাই ভোল্টেজ পরিবর্তনের জন্য কারেন্টেরও
পরিবর্তন হয়।
৫। ট্রান্সফরমেশন রেশিও
উত্তরঃ ট্রান্সফরমারের উভয় দিকের ইন্ডিউসড ভোল্টেজ এবং কারেন্ট ও কয়েলের
প্যাচের সংখার সাথে একটি নিদ্রিস্ট অনুপাত মেনে চলে, ইহাই ট্রান্সফরমেশন
রেশিও বা টার্ন রেশিও। ইহাকে সাধারণত a দ্বারা প্রকাশ করা হয়,
অর্থাৎ a = Ep/Es = Np/Ns = Is/Ip
৬। ইন্সট্রুমেন্ট ট্রান্সফরমার
CT (Current Transformer) এটি সাধারণত কম রেঞ্জের মিটার দিয়ে সার্কিটের
বেশি পরিমান কারেন্ট পরিমাপ করার জন্য ব্যবহার করা হয়। PT (Potential
Transformer) এটি সাধারণত কম রেঞ্জের মিটার দিয়ে সার্কিটের বেশি পরিমান
ভোল্টেজ পরিমাপ করার জন্য ব্যবহার করা হয়। CT ও PT এভাবে ব্যবহার করা হলে
এগুলোকে ইন্সট্রুমেন্ট ট্রান্সফরমার বলে।
৭। সার্কিট ব্রেকার
সার্কিট ব্রেকার হলো একটি বৈদ্যুতিক সুইচিং ডিভাইস যা দ্বারা ইলেকট্রিক্যাল
সার্কিটকে সাপ্লাই হতে সংযুক্ত ও বিচ্ছিন্ন করা হয়। তবে এটি ইলেকট্রিক্যাল
সার্কিটে নিয়ন্ত্রণ ও রক্ষন যন্ত্র হিসাবে কাজ করে। ওভার লোড বা শর্ট
সাকিট দেখা দিলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ঐ ইলেকট্রিকাল সার্কিটকে সরবরাহ থেকে
বিচ্ছিন্ন করে দেয়। তবে সার্কিট ব্রেকার স্বয়ংক্রিয়ভাবে সার্কিটে সংযোগ
করেনা ।
৮। আইসোলেটর
বৈদ্যুতিক সাবস্টেশনের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি বিশেষ করে ট্রান্সফরমারকে নো-লোড
অবস্থায় বা সামান্য লোড অবস্থায় লাইন হতে বিচ্ছিন্ন করার জন্য আইসোলেটর
ব্যবহার করা হয়। অর্থাৎ আইসোলেটর এক ধরনের সুইস, যা অফলাইনে অপারেটিং করা
হয়।
৯। সাব-স্টেশন কাকে বলে?
পাওয়ার সিস্টেম ব্যবস্থায় সাব-স্টেশন এমন এক কেন্দ্র যেখানে এমন সব
সরঞ্জামাদির ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে বিভিন্ন প্রকার বৈদ্যুতিক বৈশিষ্ট্য
যেমন- ভোল্টেজ, এসি/ডিসি কনভার্সন, ফ্রিকুয়েন্সি, পাওয়ার ফ্যাক্টর ইত্যাদির
পরিবর্তনে সাহায্য করে, এ ধরনের কেন্দ্রকে সাব-স্টেশন বা বিদ্যুৎ
উপকেন্দ্র বলে।
১০। পাওয়ার লাইন ক্যারিয়ার (PLC)
যে লাইনের মাধ্যমে পাওয়ার স্টেশন, সাব-স্টেশন, রিসিভিং স্টেশনে নিজস্ব
জরুরী যোগাযোগ ব্যবস্থাপনা টেলিফোনের মাধ্যমে সম্পন্ন করা হয় তাকে পাওয়ার
লাইন ক্যারিয়ার (PLC) বলে।
১১। Q-ফ্যাক্টর
AC সার্কিটে সিরিজ রেজোন্যান্সের সময় সার্কিটের L অথবা C এর আড়াআড়িতে
ভোল্টেজ প্রয়োগকৃত ভোল্টেজের তুলনায় বহুগুণে বৃদ্ধি পায়। রেজোন্যান্সের
কারনে সৃষ্ট এই ভোল্টেজ বেড়ে যাওয়াকে সিরিজ রেজোনেন্ট সার্কিটের Q-ফ্যাক্টর
(Quality Factor) বলে।
১২। পাওয়ার ফ্যাক্টর
পাওয়ার ফ্যাক্টরঃ পাওয়ার ফ্যাক্টর হল একটিভ পাওয়ার অর্থাৎ যে পাওয়ার আমরা
ব্যবহার করতে পারি এবং এ্যপারেন্ট পাওয়ারের অনুপাত। ইহাকে cosθ দ্বারা
প্রকাশ করা হয়, যার মান 0 হতে 1 পর্যন্ত।
১৩। লোড ফ্যাক্টর
গড় লোড এবং সর্বোচ্চ চাহিদার অনুপাতকে লোড ফ্যাক্টর বলে। Load Factor = Average load/Max. Demand or Peak load. এর মান ১ এর নিচে হয়।
১৪। প্লান্ট ফ্যাক্টর
কোন পাওয়ার প্লান্টের গড় লোড এবং নির্ধারিত রেটেড ক্যাপাসিটির অনুপাতকে প্লান্ট ফ্যাক্টর বলে।
Plant Factor = Average load/ Rated capacity of the plant
১৫। ডিমান্ড ফ্যাক্টর
প্লান্টের সর্বোচ্চ চাহিদা এবং সংযুক্ত লোডের অনুপাতকে ডিমান্ড ফ্যাক্টর বলে। Demand Factor = Max. Demand/ Connected Load.
১৬। ফরম ফ্যাক্টর
ফরম ফ্যাক্টর (Form Factor): কোন সাইন ওয়েভের কার্যকরী মান (RMS value) এবং
গড় মান (Average Value) এর অনপাতকে ফরম ফ্যাক্টর (Form Factor) বলে। একে
Kf দ্বারা প্রকাশ করা হয় যার মান 1.11
১৭। পিক ফ্যাক্টর
পিক ফ্যাক্টর (Peak Factor): কোন সাইন ওয়েভের সরবচ্চ মান (Max. value) এবং
কার্যকরী মান (RMS value) এর অনপাতকে পিক ফ্যাক্টর (Form Factor) বলে। একে
Ka দ্বারা প্রকাশ করা হয় যার মান 1.41
১৮। স্কিন ইফেক্ট
AC বিদ্যুৎ প্রবাহ কোন পরিবাহির মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার সময় সে পরিবাহির
ভিতরে প্রবেশ না করে উহার সারফেস দিয়ে প্রবাহিত হতে চেস্টা করে, এটাকে
স্কিন ইফেক্ট বলে। এই স্কিন ইফেক্ট এর ফলে লাইনের রেজিস্ট্যান্স বৃদ্ধি পায়
যার ফলে লাইন লসও বেড়ে যায়।
১৯। করোনা ইফেক্ট
যখন দুইটি কন্ডাক্টর এর স্পেসিং ব্যাসের তুলনায় বেশি অবস্থায় রেখে তাদের
আড়াআড়িতে AC ভোল্টেজ প্রয়োগ করে ধিরে ধিরে বাড়ানো হয় তখন একটি পর্যায় আসে।
এই বিশেষ পর্যায় কন্ডাক্টরের চারপাশে বাতাস ইলেক্ট্রস্ট্যাটিক স্ট্রেস হয়ে
আয়নিত হয় এবং বাতাসের ইন্সুলেশন স্ট্রেংথ ভেঙ্গে যায়। এই অবস্থায়
কন্ডাক্টরের চারপাশে জিম জিম শব্দসহ হালকা অনুজ্জ্বল বেগুনী রস্মি দেখা যায়
এবং ওজন গ্যাসের সৃষ্টি হয়, এই অবস্থাটিকে করোনা নামে পরিচিত।
২০। প্রক্সিমিটি ইফেক্ট
সমান্তরাল দুইটি পরিবাহীর কারেন্ট যদি পরস্পর বিপরীতমুখী হয়, তাহলে উভয়
পরিবাহীর নিকটবর্তী অংশে কারেন্ট ডেনসিটি বেড়ে যায়। আবার একমুখী কারেন্ট
হলে দূরবর্তী অংশে কারেন্ট ডেনসিটি বেড়ে যায়। এ ঘটনাকে প্রক্সিমিটি ইফেক্ট
বলে। ইহার প্রভাবে অসম কারেন্ট প্রবাহিত হয়, লাইনের রেজিস্ট্যান্স বৃদ্ধি
পায় এবং সেলফ রিয়াক্ট্যান্স এর মান কমে যায়।
২১। ফ্যারান্টি ইফেক্ট
মিডিয়াম বা লং ট্রান্সমিশন লাইনে ওপেন সার্কিট বা লোড শুন্য অবস্থায় কিংবা
অল্প লোডে চলার সময় প্রেরন প্রান্ত অপেক্ষা গ্রহন প্রান্তের ভোল্টেজের মান
বেশি হতে দেখা দেয়। এই ঘটনা বা phenomenon কে ফেরান্টি ইফেক্ট বলে।
২২। অটো ট্রান্সফরমার
অটো ট্রান্সফরমার এমন এক ব্যাতিক্রমি ট্রান্সফরমার যার মধ্যে কেবল একটি
ওয়াইন্ডিং থাকে। ইহার কিছু অংশ প্রাইমারি আর কিছু অংশ সেকেন্ডারি, উভয় কয়েল
ইলেকট্রিক্যাল ও ম্যাগনেটিক্যালি সংযুক্ত থাকে। তারপরও একে ট্রান্সফরমার
বলা হয়, কারণ ইহার কার্যপ্রণালী দুই ওয়াইন্ডিং ট্রান্সফরমার এর মতই।
২৩। স্পেসিফিক রেজিস্ট্যান্স বা রেজিস্টিভিটি
নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় একক দৈর্ঘ্য ও একক প্রস্থচ্ছেদের ক্ষেত্রফল বিশিষ্ট
কোন একটি পরিবাহী পদার্থের অথবা একক বাহু বিশিষ্ট কোন একটি ঘনক আকৃতির
পরিবাহী পদার্থের দুটি বিপরীত তলের মধ্যবর্তী রোধ বা রেজিস্ট্যান্সকে উক্ত
পরিবাহীর রেজিস্টিভিটি বা আপেক্ষিক রোধ বলে।
২৪। R.M.S মান
একটি সার্কিটে একটি নির্দিস্ট সময়ে কোন নির্দিস্ট পরিমান ডিসি (D/C)
প্রবাহিত হলে যে পরিমান তাপ উৎপন্ন, সেই পরিমান তাপ উৎপন্ন করতে ঐ সার্কিটে
উক্ত নির্দিস্ট সময়ে যে পরিমান এসি প্রবাহিত করা প্রয়োজন তাকে ঐ এসি (A/C)
কারেন্টের RMS মান বলে। RMS value = 0.707 x Max. Value
২৫। রেজোন্যান্ট ফ্রিকুয়েন্সি
একটি AC সার্কিটে ইনডাকট্যান্স ও ক্যাপাসিট্যান্স এর মান যাই হোকনা কেন যে
ফ্রিকুয়েন্সিতে ঐ সার্কিটের ইন্ডাকটিভ রিয়েকট্যান্স (XL) এবং ক্যাপাসিটিভ
রিয়েকট্যান্স (XC) সমান হয়, সেই ফ্রিকুয়েন্সিকে রেজোন্যান্ট ফ্রিকুয়েন্সি
বলে । একে fr দ্বারা প্রকাশ করা হয়
২৬। রীলে
রীলে এমন একটি সয়ংক্রীয় ডিভাইস, যা বৈদ্যুতিক সার্কিট এ কোন ফল্ট সংঘটিত
হলে, সার্কিট এর প্রটেকটিভ ডিভাইস গুলো কে সয়ংক্রীয় ভাবে অপারেট করে এবং
ফল্টযুক্ত অংশ কে ফল্টবিহীন অংশ হতে আলাদা করে ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করে।
২৭। ১০ টি রিলের নাম
১। প্রাইমারি রিলে ২। সেকেন্ডারি রিলে ৩। ডিরেকশনাল রিলে ৪। ডিফারেন্সিয়াল রিলে ৫। থার্মাল রিলে।
৬। ইলেক্ট্র থার্মাল রিলে ৭। রিভার্স পাওয়ার রিলে ৮। সলিনয়েড এন্ড প্লাঞ্জার রিলে ৯। ডিসট্যান্স রিলে
১০। ওভার ভোল্টেজ ও ওভার কারেন্ট রিলে
২৮। রিভার্স পাওয়ার রীলে
প্যারালেল অপারেশনে কোন অল্টারনেটরের ইনপুট কোন কারনে বন্ধ হলে বা অন্য কোন
ত্রুটিতে ঐ অলটারনেটর যদি বাসবার হতে পাওয়ার নেয় অর্থাৎ উল্টাদিক হতে
পাওয়ার নিয়ে অল্টারনেটরটি মোটর হিসাবে কাজ করে তখন যে রিলের মাধ্যমে
প্রটেকশন দেয়া হয় তার নাম রিভার্স পাওয়ার রীলে। এ রকম অবস্থায় রিভার্স
পাওয়ার রীলে এনারজাইজড হয় এবং ঐ অল্টারনেটরের সার্কিট ব্রেকার ট্রিপ করে
সিস্টেমকে রক্ষা করে।
২৯। থার্মাল রীলে
যে রীলে কারেন্ট বৃদ্ধির ফলে তাপমাত্রা বৃদ্ধিতে সাড়া দেয়, তাকে থার্মাল
রীলে বলে। এটা সাধারণত মোটর কন্ট্রোল সার্কিট, ব্যালান্স এবং আন-ব্যালান্স
থ্রি-ফেজ সার্কিটে ব্যবহার করা হয়।
৩০। ডিফারেনশিয়াল রীলে
ডিফারেনশিয়াল রীলে এমন এক ধরনের ডিভাইস, যা দুই বা ততোধিক ইলেকট্রিক্যাল
মান বা দিকের ভেক্টর পার্থক্য, যখন একটি আগে থেকেই নির্ধারিত মানের চেয়ে
বেশি বা কম হয় তখন এই রীলে কাজ করে সিস্টেমকে বা ইলেকট্রিক্যাল যন্ত্রকে
রক্ষা করে।
৩১। HRC ফিউজ
HRC= High Rupturing Capacity । উচ্চ কারেন্ট প্রবাহিত হয় এরকম লাইনে যে
ফিউজ ব্যবহার হয় সেগুলো HRC ফিউজ। এতে চিনা মাটির তৈরি কেসিং এর মধ্যে ফিউজ
তার সংযুক্ত থাকে। ফিউজ তারের চারদিকে বালু বা চক পাউডার এবং কেসিং এর
দু-মাথায় দুটি পিতলের ঢাকনা থাকে। ফিউজ তার উভয় ঢাকনার সাথে সংযুক্ত থাকে।
৩২। বুখলজ রীলে
ট্রান্সফরমারের বিভিন্ন ত্রুটির প্রটেকশন ও সতর্কীকরণ ব্যবস্থার জন্য
ট্রান্সফরমার ট্যাংক ও কনজারভেটর এর মাঝে পাইপে যে রীলে বসানো থাকে সেটাই
বুখলজ রীলে। ত্রুটিজনিত অতিরিক্ত কারেন্ট হতে সৃষ্ট উত্তাপে ট্রান্সফরমার
ট্যাংকে যে গ্যাসের সৃষ্টি হয়, তার চাপেই এই রীলে কাজ করে থাকে। অর্থাৎ
শুধুমাত্র অয়েল কুলিং ট্রান্সফরমারে এই রীলে ব্যবহৃত হয়।
৩৩। আর্থিং সুইস কি?
ট্রান্সমিশন লাইন রক্ষণাবেক্ষণের সময় লাইনে বিদ্যমান চার্জিং কারেন্টকে
মাটিতে পাঠানোর জন্য যে সুইস ব্যবহৃত হয় সেটি আর্থিং সুইস (ES) নামে
পরিচিত। আগে আইসোলেটর দিয়ে সার্কিট ডিসকানেক্ট করে আর্থ সুইস দ্বারা লাইনকে
আর্থের সাথে সংযোগ করা হয়।
৩৪। ওয়েভ ট্রাপ কি?
সাব-স্টেশনে ব্যবহৃত ক্যারিয়ার সরঞ্জামাদির মধ্যে ওয়েভ ট্রাপ অন্যতম একটি
ডিভাইস, যার মাধ্যমে ট্রান্সমিশন লাইনের ওয়েভকে ফিল্টার করা হয়। পাওয়ার
লাইনের মাধ্যমেই কমুনিকেশন ফ্রিকুয়েন্সিও পাঠানো হয়, পরবর্তীতে এই ওয়েভ
ট্রাপ দিয়ে কমুনিকেশন ফ্রিকুয়েন্সিকে আলাদা করে শব্দ শক্তিতে রুপান্তর করে
টেলিফোন বা যোগাযোগ ব্যবস্থা সম্পন্ন করা হয়।
৩৫। সার্জ ভোল্টেজ কি?
পাওয়ার সিস্টেমে হঠাৎ করে খুব অল্প সময়ের জন্য অস্বাভাবিক ভোল্টেজ বৃদ্ধিকে সার্জ ভোল্টেজ বলে। একে ট্রানজিয়েন্ট ভোল্টেজও বলে।
৩৬। কারেন্ট লিমিটিং রিয়াক্টর
কারেন্ট লিমিটিং রিয়াক্টর বা বিদ্যুৎ সীমিত করন রিয়াক্টর যথেষ্ট ইন্ডাক্টিভ
রিয়াক্ট্যান্স বিশিষ্ট এক ধরনের ইন্ডাকটিভ কয়েল। শর্ট সার্কিট অবস্থায়
কারেন্টের পরিমাণকে সীমিত রেখে ফল্ট কারেন্টের বিপদমাত্রা নিরাপদ সীমায়
নিয়ে আসার জন্য এই রিয়াক্টর লাইনের সাথে সিরিজে সংযোগ করা হয়।
৩৭। লোড শেডিং
যখন চাহিদার তুলনায় উৎপাদিত বিদ্যুৎ এর পরিমান কম হয়, তখন কোন কোন এলাকায়
বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রেখে অন্যান্য এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু রাখা হয়,
যাতে ওভার লোডে পুরো সিস্টেম বন্ধ হয়ে না যায়। এ ব্যবস্থাকে লোড শেডিং বলে।
৩৮। লোড শেয়ারিং
একটি বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের উপর অর্পিত সকল লোড বিভিন্ন প্লান্টের সকল
জেনারেটরের মধ্যে যুক্তিযুক্ত ভাবে বন্টন করাকে লোড শেয়ারিং বলে।
৩৯। ‘ j ‘ operator কাকে বলে?
একটি operator যার মান √-1 কোন ভেক্টরের সহিত মাল্টিপ্লাইং ফ্যাক্টর হিসাবে ব্যবহৃত হয়ে উক্ত ভেক্টর এর ৯০০ বামাবর্তে ঘূর্ণন নির্দেশ টাকা ‘ j ‘ operator বলে।
৪০। ওহমের সূত্র
ওহমের সুত্রঃ স্থির তাপমাত্রায় কোন বর্তনীর মধ্য দিয়ে যে কারেন্ট প্রবাহিত
হয়, তাহা ঐ বর্তনীর দুই প্রান্তের বিভব পার্থক্যের সহিত সরাসরি সমানুপাতিক
এবং রেজিস্টেন্সের সহিত উল্টানুপাতিক। অর্থাৎ I αV or I α1/V or I =V/R.
৪১। কারশফের সূত্র
কারশফের কারেন্ট সুত্র (KCL) কোন বৈদ্যুতিক নেটওয়ার্কের এক বিন্দুতে মিলিত
কারেন্ট সমুহের বীজগাণিতিক যোগফল শুন্য অথবা কোন বিন্দুতে আগত কারেন্ট =
নির্গত কারেন্ট।
কারশফের ভোল্টেজ সুত্র (KVL) কোন বদ্ধ বৈদ্যুতিক নেটওয়ার্কের সকল ই.এম.এফ এবং সকল ভোল্টেজ ড্রপের বীজগাণিতিক যোগফল শুন্য।
৪২। ফ্যারাডের সূত্র
প্রথম সুত্রঃ একটি তার বা কয়েলে ই. এম. এফ আবিষ্ট হয় তখন, যখন উক্ত তার বা
কয়েলের সাথে সংশ্লিষ্ট চৌম্বক ফ্লাক্স বা চৌম্বক বল রেখার পরিবর্তন ঘটে।
দ্বিতীয় সুত্রঃ আবেশিত বিদ্যুচ্চালক বল এর পরিমান চৌম্বক বল রেখার পরিবর্তনের হারের সাথে সরাসরি সমানুপাতিক।
উপরোক্ত সূত্র দুটি একত্রে এভাবে লেখা যায়ঃ একটি পরিবাহী এবং একটি চৌম্বক
ক্ষেত্রে আপেক্ষিক গতি যখন এরুপভাবে বিদ্যমান থাকে যে, পরিবাহীটি চৌম্বক
ক্ষেত্রটিকে কর্তন করে, তখন পরিবাহিতে আবেশিত একটি বিদ্যুচ্চালক বল সংঘটিত
কর্তনের হারের সাথে সমানুপাতিক।
৪৩। লেনজের সূত্র লিখ।
আবেশিত বিদ্যুচ্চালক বলের কারনে পরিবাহী তারে প্রবাহিত আবেশিত কারেন্ট
পরিবাহী তারের চারপাশে একটি চৌম্বক ক্ষেত্র সৃষ্টি করে, যা দারা আবেশিত
কারেন্টের উৎপত্তি, উহাকেই (অর্থাৎ পরিবর্তনশীল ফ্লাক্স) এ (সৃষ্ট চৌম্বক
ক্ষেত্র) বাধা প্রদান করে । যেখানে পরিবাহী স্থির এবং চৌম্বক ক্ষেত্র গতিতে
থাকে সেখানে লেনজের সূত্র ব্যবহার হয়।
৪৪। ফ্লেমিং এর রাইট হ্যান্ড রুল কি?
দক্ষিণ হস্তের বৃদ্ধাঙ্গুলি, তর্জনী ও মধ্যমাকে পরস্পর সমকোণে রেখে বিস্তৃত
করলে যদি তর্জনী চৌম্বক বলরেখার অভিমুখ এবং বৃদ্ধাঙ্গুলি পরিবাহী তারের
ঘূর্ণনের অভিমুখ নির্দেশ করে, তবে মধ্যমা পরিবাহিতে প্রবাহিত আবেশিত
কারেন্টের অভিমুখ নির্দেশ করেবে। ইহাই ফ্লেমিং এর রাইট হ্যান্ড রুল। যেখানে
চৌম্বক ক্ষেত্র স্থির এবং পরিবাহী গতিতে থাকে, সেখানে ফ্লেমিং এর রাইট
হ্যান্ড রুল ব্যবহার করা হয়।
৪৫। মিউচুয়াল ফ্লাক্স কাকে বলে?
পাশাপাশি অবস্থিত দুটি কয়েলের একটিতে কারেন্ট প্রবাহের ফলে সৃষ্ট ফ্লাক্সের
যে অংশবিশেষ অন্যটিতে সংশ্লিষ্ট হয়, তাকে মিউচুয়াল ফ্লাক্স বলে।
৪৬। এডি কারেন্ট
যখন একটি বৈদ্যুতিক চুম্বকের কয়েলের মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত কারেন্ট পরিবর্তিত
হতে থাকে, তখন চৌম্বক ক্ষেত্রও পরিবর্তিত হতে থাকে। এই পরিবর্তনশীল
ফ্লাক্স কয়েলের তারকে কর্তন করে, ফলে কয়েলে একটি ভোল্টেজের সৃষ্টি হয়। একই
সময়ে এই ফ্লাক্স লৌহ দণ্ডকেও কর্তন করে। ফলে এই লৌহ দণ্ডেও ভোল্টেজের
সৃষ্টি হয়। এই ভোল্টেজের কারনে লৌহ দণ্ডে একটি কারেন্ট আবর্তিত হতে থাকে,
এই আবর্তিত কারেন্টকেই এডি কারেন্ট বলে।
৪৭। স্যাগ
দুইটি পোল বা টাওয়ারের মধ্যে কন্ডাকটর লাগানো হলে কন্ডাকটরটি কিছুটা ঝুলে
পড়ে। পোল বা টাওয়ার দুইটির যে বিন্দুতে কন্ডাকটর লাগানো হয়েছে সেই বিন্দু
দুইটির সংযোগকারি কাল্পনিক রেখা হতে কন্ডাকটরটির সর্বোচ্চ ঝুলকে স্যাগ
(SAG) বা ঝুল বলে।
৪৮। তার ও ক্যাবল
তার খোলা বা হালকা ইন্সুলেশন যুক্ত হয় এবং সলিড বা স্ট্রান্ডেড হয়, কিন্তু ক্যাবল সব সময় ইন্সুলেটেড ও স্ট্রান্ডেড হয়।
৪৯। A.C.S.R ক্যাবল
একে Steel cored aluminium-ও বলে। উচ্চ ভোল্টেজ পরিবহন করার জন্য
অ্যালুমিনিয়াম কন্ডাকটরের কেন্দ্রে প্রলেপ যুক্ত ষ্টীল কোর ব্যবহার করে
A.C.S.R তার তৈরি করা হয়। এতে অ্যালুমিনিয়াম তারের টান সহন ক্ষমতা বৃদ্ধি
পায়।
৫০। লাইটিং এরেস্টার
লাইটনিং এরেস্টার বা সারজ ডাইভারটার এক ধরনের ইলেকট্রিক্যাল প্রটেকটিভ
ডিভাইস, যা পাওয়ার সিস্টেমে হাই ভোল্টেজকে বা সারজ ভোল্টেজকে সরাসরি মাটিতে
প্রেরন করে।